নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির হাত ধরেই দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হয়েছিলো। বর্তমান সরকার সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশের বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি ৭৫’-এর পর বিএনপির হাত ধরে চালু হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে শেখ হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনা এদেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করে বিচারের সংস্কৃতি চালু করেছে। এখন কোনো অপরাধী অপরাধ করে ছাড় পায় না। অপরাধী যত প্রভাবশালী বা দলীয় পরিচয়ে হোক কাউকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেহাই দেননি।
বিএনপির সরকারের শাসনামলগুলো মানুষ বিচার পায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার তারা করেনি এবং খুনিদের বিচার যাতে বন্ধ করা যায়, সেজন্য তারা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আমাদের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করে খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করেছিলো। তখন হয়নি জেল হত্যার বিচারও। বিচার বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০১ সালে নারী নির্যাতনের রেকর্ড করে বিএনপির সরকার। পূর্নিমা, রহিমা ফাহিমাসহ হাজারো নারী নির্যাতিত হয়েছে। তারা বিচার করেনি। সংখ্যালঘু নির্যাতনে মাত্রা ও ধরন সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছিলো। ২০০৪ সালে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চালানো হয় গ্রেনেড হামলা। বিচার তো করেই নি, বরং পদে পদে বাধাগ্রস্ত করেছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হত্যকাণ্ড চালানো এবং বিচারের পথ বন্ধ করার জন্য বিএনপি অপারেশন ক্লিন হার্টে যাদের হত্যা করা হয়েছিলো তাদের বিচার বন্ধে সংসদে ইনডেমনিটি দিয়েছিলো।
নারীর প্রতি অবমাননা, সহিংসতা এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করার মধ্য দিয়ে সরকার কঠোর মনোভবের প্রতিফলন ঘটিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার আবারো প্রমাণ করেছে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। আইনের বিধান কঠোরভাবে কার্যকর করলে অপরাধীরা ভয় পাবে এবং এ সকল ঘৃণ্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আসবে। পাশাপাশি এই সমাজের সকল স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সকল অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দান থেকে বিরত থাকতে হবে। তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের পথও চিরতরে বন্ধ করতে হবে।
সরকার যে কোনো অপরাধ সংগঠিত হওয়ার সাথে সাথে আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশে-বিদেশে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশ রাষ্ট্র সরকার বিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। উদ্দেশ্যমূলক গুজব ছড়াচ্ছে। আমি দেশবাসীকে এই স্বার্থান্বেষী মহলের এ সকল উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান এবং সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি। প্রধানমন্ত্রীকে টার্গেট করেই মূলত তারা অপপ্রচার করছে। নষ্ট করছে দেশের ভাবমূর্তি।
শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি করোনার ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের মধ্েয বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি আয় বাড়ছে, বাড়ছে প্রবাসী আয়। দেশের অর্থনীতি করোনার নেতিবাচক মনোভাব থেকে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বর প্রশংসা করছে বিশ্বমহল। দেশ যখন এগিয়ে যায় তখন একটি মহল দেশকে পিছিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কিন্তু দেশের জনগণ শেখ হাসিনার সাথে রয়েছে তার নেতৃত্বের ওপর মানুষের আস্থা রয়েছে।
Leave a Reply