জাহাঙ্গীর হোসেন:
মহান মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের বীরযোদ্ধা একাব্বর হোসেন এমপি করোনা মহামারিযুদ্ধেও একজন সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে নিজ নির্বাচনী এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের স্বাস্থ্য সচেতন করার পাশাপাশি কর্মহীনদের ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া, মহামারি ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসনকে সার্বক্ষণিক নির্দেশনা প্রদান, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষাসামগ্রীর প্রদান, কৃষকের ধানকাটা ও মাড়াইয়ের যন্ত্র প্রদান, খাদ্যসংকটের কথা ভেবে কৃষকদের বিভিন্ন প্রকার সবজি বীজ বিতরণ এবং অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছেন।ইতিমধ্যে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন তার নির্বাচনী এলাকার কর্মহীন একজন মানুষও না খেয়ে মারা যাবে না। মহামারির এই সময়ে এমপি একাব্বর হোসেনের কর্মতৎপরতায় জনসাধারণ এবং নেতাকর্মীসহ স্থানীয় প্রশাসনও বেজায় খুশি।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন মির্জাপুর আসন থেকে পরপর চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এই নেতা ১৯৭১ সালে জাতির জনকের ডাকে সারা দিয়ে মহান মুক্তিযোদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করা এই নেতা দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্বে মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দলের যেকোন কর্মসূচি বাস্তবায়নসহ জাতির এই দুর্যোগ মুহূর্তেও যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে লকডাউনের কারণে সারাদেশের ন্যায় মির্জাপুরেও হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে ঘরবন্দি হয়ে পড়ে। এমপি একাব্বর হোসেন ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নিজ এলাকার মানুষকে সচেতন করতে সচেতনামূলক লিফলেট ছাপিয়ে তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেন। এছাড়া তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুই হাজার কর্মহীন পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করার পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীদের সামর্থ অনুয়ায়ী কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন। তার নির্দেশে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও কর্মহীন মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্যসহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহ ও তাদের চিকিৎসা সহায়তার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজের সুবিধার জন্য তিনি স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে লকডাউনে ধানকাটা শ্রমিক সংকটের কথা চিন্তা করে তড়িৎগতিতে তার নির্বাচনী এলাকার জন্য চারটি ধানকাটা ও মারায় যন্ত্রের ব্যবস্থা করে তা কৃষকের মধ্যে বিতরণ করেছেন। তাছাড়া এমপির নির্দেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের নিজ নিজ ওয়ার্ডের অসহায় কৃষককে ধান কেটে ঘরে তুলে দিচ্ছেন।
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বে খাদ্য সংকট দেখা দেয়ায় একাব্বর হোসেন তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও প্রশাসনের মাধ্যমে কৃষকের মধ্যে সবজী বীজ বিতরণ করছেন। এ সময় তিনি কৃষকের এক ইঞ্চি জমিও যাতে অব্যবহৃত না থাকে সে পরামর্শ দেন বলে জানা গেছে।
করোনা সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করাসহ সরকারের দেয়া খাদ্যসহায়তা দলমত নির্বিশেষে সুসম বণ্টন হয় সে ব্যাপারে তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে সার্বক্ষণিক দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।
পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নূরুল ইসলাম ও জাকির হোসেন জানান, খবরে দেখতে পাই অনেক এলাকার এমপিসহ জনপ্রতিনিধিরা করোনাভাইরাসের ভয়ে নিজ এলাকায় যাচ্ছেন না বা ঘরে থাকছেন। কিন্ত আমাদের এমপি একাব্বর হোসেন ভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকে যেভাবে কর্মহীন মানুষের পাশে থেকে খাদ্যসহায়তা দেয়াসহ নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছেন- তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সিয়াম জানান, এমপি সাহেবের নির্দেশে ইতিমধ্যে তারা কয়েকটি এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে দরিদ্র ও অসহায় কৃষকের ধানকেটে ঘরে তুলে দিয়েছেন। তাদের এ কর্মসূচি অব্যহত থাকবে বলে তারা জানিয়েছেন।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবুল হোসেন জানান, এমপি সাহেবের নির্দেশে ইতিমধ্যে তিনি নিজে একহাজার কর্মহীন পরিবারে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। একই কথা জানান, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক শামীম আল মামুনও।
মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাকসুদা খানম জানান, এমপি স্যার ইতিমধ্যে তাদের ৫ হাজার স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এতে তার বিভাগের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজে গতি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মালেক জানান, সারাদেশের ন্যায় মির্জাপুরেও লকডাউন বাস্তায়নে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। এমপি স্যারের সার্বক্ষাণিক নির্দেশনায় সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা সুসমভাবে বন্টন করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে সহায়তাসহ কৃষি ও স্বাস্থ্য বিভাগের কথা চিন্তা করে ধানকাটার যন্ত্র ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেয়ায় সংশ্লিষ্ট পেশায় গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এমপি স্যারের কর্মকাণ্ডে তিনিও খুবই খুশি বলে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে একাব্বর হোসেন এমপির সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির জনকের ডাকে সারা দিয়ে দেশের মানুষের জন্য জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছি। ২০২০ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেও করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় মানুষের জন্য যু্দ্ধে নেমেছি। ভয় না পেয়ে সচেতন থেকে ভাইরাস মোকাবেলা করতে হবে। জনগণকে সচেতন করে সেই যুদ্ধই করছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
Leave a Reply