শাহ সৈকত মুন্না
প্রায় দীর্ঘদিন ধরে অত্যান্ত জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবন (স্টেডিয়াম) মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ না আসায় প্রয়োজনীয় রক্ষনাবেক্ষন ও তদারকির অভাবে স্টেডিয়াম ভবনটি সংস্কারের অভাবে যে কোন সময় ধ্বসে (ভেঙ্গে) পরে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঘটতে পারে। আজ মঙ্গলবার উপজেলা সদরের বাইমহাটি এলাকায় উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবনে গিয়ে দেখা গেছে খুবই করুন অবস্থা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সুত্র জানায়, উপজেলা সদরের বাইমহাটি মৌজায় জে. এল. নং-১৪৩ এবং ৩৩৯ নম্বর দাগে ৮ দশমিক ২৮ শতাংশ জমির উপর ক্রীড়া সংস্থার ভবন (স্টেডিয়াম) নির্মান করা হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রতিশ্রুতি প্রকল্প ঢাকা বিভাগীয় উন্নয়ন বোর্ডের অর্থে ১৯৭৯ সালে টাঙ্গাইলের তৎকালিন জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল ইসলাম ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে মনোরম পরিবেশে ক্রীড়া সংস্থার স্টেডিয়াম ভবনটির ভিত্তি প্রস্তর করেন। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার স্টেডিয়াম ভবনের পাশে রয়েছে বিশাল একটি মাঠ। এই ভবনে বসেই খেলাধুলা পরিচালিত হয়ে আসছে। খেলাধুলার পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান এই ক্রীড়া সংস্থার ভবনে (স্টেডিয়ামে) অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
৪২ বছর পুর্বে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা ভবন নির্মিত হলেও এটির এখন রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। ভবনের উপরের ছাঁদে গাছপালা, আগাছা ও লতাপাতা জন্মে বেহাল অবস্থা। ছাঁদ দিয়ে ও চার পাশের দেয়াল চুইয়ে পানি পরায় ইট-সুরকি-বালি ও রড ধ্বসে পরছে। ভবনটি যে কোন সময় ভেঙ্গে পরার আশংকায় উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা ২০১৬ সালে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করে লাল অক্ষরে লিখে সাইন বোর্ড ঝুঁলিয়ে দিয়েছেন। ঝুঁকিপুর্ন ভবনের মধ্যেই উপজেলার ক্রীড়া সংস্থার সকল কার্যক্রমসহ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে জীবনের উপর ঝুঁকি নিয়ে তাদের দায়িত্ব বা কাজ করে আসছেন। খেলোয়াড়দের মধ্যে আবু কাওসার চপল, দিদারুল ইসলাম ও সাধারন জনগনের দাবী মির্জাপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবন ও খেলার মাঠের দ্রুত উন্নয়ন প্রয়োজন।
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবনটি (স্টেডিয়াম) কয়েক যুগ ধরে খুবই ঝুঁকিপুর্ন। ভবনটি নতুন ভাবে তৈরী করার জন্য স্থানীয় এমপি, ডিসি, ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শক্রমে অর্থ বরাদ্ধ চেয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ে আবেদনসহ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৯ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল মির্জাপুরে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা ভবন ও স্টেডিয়াম পরিদর্শনে এসে জরাজীর্ন অবস্থা দেখে একটি নতুন ভবন নির্মানের প্রতিশ্রুতি দেন। যুব ও ক্রীড়া প্রতি মন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি ও অর্থ বরাদ্ধ এখনও আলোর মুখ দেখেনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, যুব সমাজকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। সে জন্য তাদের জন্য প্রয়োজন একটি ক্রীড়া সংস্থা ভবন ও ভাল একটি খেলার মাঠ। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবনটি দীর্ঘ দিন ধরে জরাজীর্ন ও ঝুঁকিপুর্ন। স্থানীয় এমপি মহোদয়, জেলা প্রশাসক মহোদয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে অর্থ বরাদ্ধ সােপক্ষে দ্রুত সময়ের মধ্যে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবন নির্মানের জন্য। আশা করা হচ্ছে অল্প সময়ের মধ্যেই ক্রীড়া সংস্থার ভবন নির্মান হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. একাব্বর হোসেন এমপি বলেন, মির্জাপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ৮ শতাংশ জমির উপর ভবন নির্মানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
Leave a Reply