মো. জোবায়ের হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার
বনের পাশে ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় পরে ছিলো মধ্য বয়সী অজ্ঞাত পরিচয়ের এক নারীর লাশ। স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু লাশটির পরিচয় শনাক্তের কোন আলামত পায়না পুলিশ। খুঁজতে খুঁজতে বনের ভেতর মেলে একটি হাত ব্যাগ ও রক্তাক্ত চাপাতি। কিন্তু ব্যাগের ভেতর একটি প্রেসস্ক্রিপশন ছাড়া মেলেনা লাশের পরিচয় শনাক্তের কোন আলামত। অবশেষে সেই প্রেসস্ক্রিপশনেই মেলে সেই নারীর পরিচয়, পুলিশকে পৌছে দেয় হত্যাকারীদের দরজায়, উন্মোচিত হয় হত্যা রহস্য।
গত ১৮ই নভেম্বর উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের মজিদপুর বনের ভেতর ঘটে এই হত্যাকাÐ। নির্মমভাবে খুন হন নার্গিস কাওছার সাদিয়া নামের এক মধ্য বয়সী ডির্ভোসী নারী। হত্যাকান্ডে অংশ নেন হাশেম, হান্নান, হাসান নামের তিন সহোদর। এঘটনায় গত ২০ নভেম্বর মো. হাশেম ও মো. হান্নানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরদিন আদালতে ঘাতকরা হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন। তবে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত হত্যাকারীরা ছিলেন নির্ভাবনায়। ভেবেছিলেন কখনোই উন্মোচিত হবেনা এই হত্যার রহস্য।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এটিএম জহিরুল ইসলাম সূত্রে জানা যায়, স্বামীর সাথে ডিভোর্স হওয়ার পর গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন নিহত নার্গিস কাওছার সাদিয়া। সেখানে তার সাথে পরিচয় হয় সেখানকার ঝুট ব্যবসায়ী হাশেমের সাথে। ওই নারীর নিঃসঙ্গতার সুযোগে তার সাথে ঘনিষ্ঠতা, একটি ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করেন হাশেম। এরপর ওই নারীর কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ৮ লাখ টাকা ধার নেন। সেই টাকা আত্মসাৎ ও ব্যক্তিগত সম্পর্কের অবসান ঘটাতে ভাইদের নিয়ে নিখুত পরিকল্পনা করেন হাশেম। ঠিক করে রাখেন কোথায় কিভাবে তাকে হত্যা করা হবে। এরপর বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে ঘটনার দিন বিকেলে নার্গিসকে নিয়ে বের হন হাশেম। পেছনে মোটরসাইকেলযোগে আসে হত্যাকান্ডে অংশ নেয়া হাশেমের দুই ভাই। রাত ৮ টার দিকে রাস্তার নির্জনতার সুযোগে নার্গিসকে টেনে হিচড়ে নেয়া হয় বনের ভেতর। প্রাণ বাঁচাতে নার্গিস দৌড় দিলে পেছন থেকে তাকে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। আহত অবস্থায় রাস্তার পাশে এসে পরে যায় নার্গিস। মৃত্যু নিশ্চিত করে দ্রæত সটকে পরে ঘাতকরা।
এ বিষয়ে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার এস এম মনসুর মূসা বলেন, অপরাধী অপরাধের কোন না কোন চিহ্ন রেখে যায়। এমনই একটা চিহ্ন ধরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই হত্যার রহস্য, অপরাধীদের দ্রæত আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।