মো. জোবায়ের হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চুরি হওয়া গাভি-বাছুর উদ্ধারের পর সেগুলো প্রকৃত মালিককে ফেরত দিতে পুলিশের এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে। গাভি-বাছুর মালিক ফজলু শেখের ভাগনে উজ্জল সিকদার মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী হাসানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বাওয়ার কুমারজানি গ্রামের ফজলু শেখের বাড়ির গোয়ালের তালা ভেঙে ১টি গাভি ও একটি বকনা বাছুর গরু চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় গরুগুলোর মালিক ফজলু মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের কদিমধল্যা এলাকা থেকে চুরি হওয়া দুটি গরু, চুরির গরু বহনকারী ট্রাক ও চোরকে আটক করেন। আটককৃত জেলার কালিহাতি উপজেলার মালতী দক্ষিণপাড়া গ্রামের তোফাজ্জাল হোসেন তোতার ছেলে আল আমিন (৩৫)। পরে ফজলু তাঁর চুরি যাওয়া গরুর সঙ্গে উদ্ধারকৃত গরু মিলিয়ে নিয়ে আল আমিনকে বুধবার ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। উদ্ধার হওয়া গরু দুটি বাজার মূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা।
এদিকে থানা হেফাজত থেকে গরুগুলো নিজেদের জিম্মায় নিতে ফজলু শেখের ভাগনে উজ্জল সিকদার উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বজলুর রহমান বাদল ও ভাওড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফারুক হোসেন স¤্রাটের সহযোগিতা নেন। উজ্জল ও বিএনপি নেতা বাদলের উপস্থিথিতে বিএনপি নেতা ফারুক হোসেন স¤্রাট তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন দিয়ে এস আই আলী হাসানের সঙ্গে লাউড স্পিকারে কথা বলেন। এ সময় গাভি-বাছুর মালিককে ফিরিয়ে দিতে আলী হাসান ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। উজ্জল সিকদার স¤্রাটের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। কিন্তু তাতেও আলী হাসান রাজি হননি। তিনি বৃহস্পতিবার চোর সদস্য আল আমিনকে টাঙ্গাইলের আদালতে হাজির করেন।
উজ্জল সিকদার জানান, তাঁরা এস আই আলী হাসানকে গরুগুলো ফেরত দিতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি ৫০ হাজার টাকা ঘুষ চান। টাকা দিলে থানা থেকে গরু দিবেন। না দিলে আদালত থেকে নিতে হবে বলে জানিয়েছিলেন। তবে আদালতের মাধ্যমে গরুগুলো ফেরত পাওয়ার কোন আইনী দিকনির্দেশনাও ওই এসআই তাদের দেননি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
মুঠোফোনে ভাওড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফারুক হোসেন স¤্রাট বলেন, গরুগুলো ফেরত দিতে এস আই ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। তাঁরা ১০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। কিন্তু তিনি তা মানেননি।
এস আই মোহাম্মদ আলী হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ওনাদের আদালত থেকে গরু নিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’
এব্যাপারে মির্জাপুর থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গরু ফেরত পেতে মালিকসহ আত্মীয়দের আদালতে আবেদন করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কেউ টাকা চাইলে তাঁর কাছে অভিযোগ করতে পারতেন।