কোনো এক কালে বনের ধারে সুন্দর ছোট্ট একটি কুঁড়েঘরে বাস করত এক বৃদ্ধ মা ছাগল। তার ছিল সাতটি ছোট্ট ছাগল চানা। সে তাদের সবাইকে খুব ভালোবাসত। সবাই ছিল তার প্রিয়। মাঝেমধ্যে সে নিজের ও ছানাদের খাবার সংগ্রহের জন্য কুড়েঘরের বাইরে যেত। এমনই একদিন সে বাইরে যাবে বলে ছানাদের ডেকে সবাইকে সতর্ক করে কিছু কথা বলল। সবাই যেন নিরাপদ থাকতে পারে, সেজন্য কিছু পরামর্শ দিল।
মা ছাগল বলল, আমার প্রিয় ছানাপোনারা, সবাই সচেতনভাবে শোনো, আমাকে আজ খাবার আনতে বাইরে যেতে হবে। আমি চাই তোমরা সবাই খুব সতর্ক থাকবে। কারণ আমি শুনেছি, এখানে আছে একটি বুড়ো নেকড়ে। যদি সে এখানে আসে, আর তোমাদের বাইরে দেখে, আমি নিশ্চিত যে, তোমাদের সবাইকে সে গবগব করে গিলে ফেলবে। তোমাদের সবাইকে খাবে। তোমাদের চামড়া, তোমাদের কান, তোমাদের নাক, তোমাদের দাঁত, তোমাদের নাড়িভুঁড়ি, সব খাবে, সব। সে খুব হিং¯্র আর ধূর্ত নেকড়ে। ছদ্মবেশে সে তোমাদের ধোঁকা দেওয়ার অনেক চেষ্টা করতে পারে। তাই ঘরে ভেতরেই থেকো, কারো জন্যই দরজা খোলো না।
ছাগলছানারা বলল, মা তুমি চিন্তা করো না। সত্যি বলছি, আমরা খুবই সতর্ক থাকব। তুমি যেভাবে বলবে সেভাবেই সব কিছু করব। আমরা কেউ ঘরে ঢুকতে দেরি করব না। আমাদের নিয়ে তুমি দুশ্চিন্তা করো না।
মা-ছাগল তাড়া দিয়ে তার ছোট্ট সাতটি ছানাকে ঘরে ঢুকিয়ে দিল। বনের উদ্দেশে বেরিয়ে যাওয়ার আগে সামনের দরজায় তালা দিয়েছে কি না তা নিশ্চিত হলো। তারপর বনের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ল।
ধূূর্ত বুড়ো নেকড়ে সম্ভবত আশেপাশেই গাছের আড়ালে লুকিয়ে ছিল। মা ছাগল কী করছে তা দেখছিল। সে চলে যাওয়ার কয়েক মিনিট পরেই নেকড়ে ঘরের দরজায় কড়া নাড়ল।
ছাগলছানাদের মধ্যে সবচেয়ে বড়টি জানতে চাইল, কে এখানে?
নেকড়ে বলল, দরজা খোলো! আমি তোমার মা। আমি তোমাদের সকলের জন্য কিছু সুন্দর জিনিস নিয়ে এসেছি।
কিন্তু ছোট্ট ছাগলছানাটির কাছে তার গলার স্বর কর্কশ মনে হলো। সে বুঝতে পারল, এটি ওর মা নয়। তাই তারা বলল, তুমি আমাদের মা নও, মায়ের গলার স্বর খুবই মিষ্টি। তোমার গলার স্বর কর্কস আর বাজে। নিশ্চয়ই তুমি সেই বুড়ো নেকড়ে। আমরা দরজা খুলব না। চলে যাও তুমি।
তাই নেকড়ে চলে গেল। সে ভাবতে লাগল, কীভাবে তার গলার স্বর বদলানো যায়। সে মৌমাছির কাছে গেল এবং বেশ খানিকটা মধু নিল। গলার স্বরটাকে নরম ও মিষ্টি করার জন্য সবটুকু মধু গলায় ঢেলে দিল। তারপর আবার সে ছাগলের কুড়েঘরে ফিরে গেল, আবার দরজায় কড়া নাড়ল। সে বলল ‘ওহে আমার ছানাপোনারা দরজা খোলো। আমি, তোমার প্রিয় মা। আমি তোমাদের জন্য খুব মজার মজার কিছু খাবার নিয়ে এসেছি।’
নেকড়ে আর কিছু না ভেবে, তার গলার স্বর নরম করল এবং সেই তাদের মাÑ এটা বোঝানোর জন্য তার বড় আকারের কালো থাবা জানালার সামনে তুলে ধরল। ছাগলছানারা ওগুলো দেখল। তারা বুঝে গেল এর মধ্যে কিছু গড়বড় আছে। সবচেয়ে বড় ছানাটি বলল, না, না, না। আমাদের মায়ের তোমার মতো এত বড়ো কালো থাবা নেই। তার থাবাগুলো দেখতে আরো সুন্দর, পরিচ্ছন্ন। তুমি অবশ্যই সেই বুড়ো নেকড়ে। আমরা তোমার জন্য কখনোই দরজা খুলব না। তোমাকে ঘরে ঢুকতে দেব না।
নেকড়েটি আবার চলে গেল। সে ভাবল, কীভাবে তার থাবা ছদ্মবেশ ধারণ করে লুকিয়ে রাখা যায়। তার একটা চমৎকার বুদ্ধি মাথায় এলো। সে দ্রুত চলে গেল এমন এক জায়গায়, যেখানে বাস করে বেকারির একজন কারিগর। সেখানে গিয়ে সে তাকে বলল, শিকারির হাত থেকে বাঁচতে দৌড়াতে গিয়ে পায়ের পাতায় ব্যথা পেয়েছে, তাই সে যেন তার থাবায় পাউরুটি তৈরির জন্য মেখে রাখা ময়দা লাগিয়ে দেয়। বেকারির কারিগর পাউরুটি তৈরির জন্য মেখে রাখা ময়দা তার থাবায় লাগিয়ে দিল। এখান থেকে সে গেল ময়দার মিল মালিকের কাছে। তাকে বলল, সে যেন থাবায় লাগানো মাখা-ময়দার ওপর ময়দার গুঁড়া মাখিয়ে দেয়। কিন্তু মিল মালিক তা করতে রাজি হলো না। কারণ, তার মনে হচ্ছে নেকড়েটা কোনো একটা চালাকি করছে। কিন্তু নেকড়েটা হিং¯্র গর্জন করল, মিল মালিককে বলল, আমাকে কিছু ময়দা দাও, নয়ত আমি তোমার নাক কামড়ে ছিড়ে নেব।
তাই মিল মালিক একটা ব্যাগে কিছু ময়দা নিয়ে নেকড়েটাকে দিয়ে কোনোরকমে বিদায় করল। নেকড়েটা যাওয়া মাত্র সে ভয়ে তার মিলের দরজা বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দিল।
নেকড়ে দ্রুত ছুটে চলল কুড়েঘরের দিকে। সেখানে পৌঁছে ব্যাগ খুলে কিছু ময়দা নিল। তারপর থাবার ওপরে মাখানো ময়দার তালে শুকনো ময়দা ছড়িয়ে দিল। সে নিজে নিজেই বিড়বিড় করে বলল, এখন দেখা যাবে, ওই ছাগলছানাগুলো কীভাবে এবার দরজা না খোলে।
তৃতীয় বার নেকড়ে কুড়েঘরের কাছে গেল। আবার দরজায় কড়া নাড়ল। ছাগল-ছানাদের ডেকে বলল, ওহে অমাার ছোট্ট ছানাপোনারা, দরজা খোলো। আমি তোমার মা, তোমাদের জন্য খুব মজার কিছু খাবার নিয়ে এসেছি।
ছোট্ট ছোগল-ছানাদের মধ্যে সবচেয়ে বড়টি জানালার কাছে গেল। চিৎকার করে বলল, আমাদেরকে তোমার পায়ের পাতাগুলো দেখাও, যাতে আমরা বুঝতে পারি, তুমি সত্যিই আমাদের মা।
নেকড়ে ময়দা-মাখানো তাল ও ময়দার গুড়া দিয়ে ঢাকা পায়ের পাতাগুলো জানালার সামনে তুলে ধরল। তারপর জিজ্ঞেস করল, তোমরা দেখেছ? এবার সত্যিই আমি, তোমার মা।
ছাগল-ছানারা এবার বিশ্বাস করতে শুরু করল, দরজার বাইরে যে আছে সে সত্যিই তাদের মা। ছাগলছানাদের মধ্যে সবচেয়ে বড়টি সতর্কভাবে দরজা খুলে দিল।
তৎক্ষণাৎ নেকড়েটি কর্কশ-গলায় হুঙ্কার ছেড়ে দ্রুত ঘরে ঢুকে গেল। আর ছাগলছানাগুলো ভয়ঙ্কর আর্তনাদ করে হুমাগুড়ি দিয়ে ঘরের মধ্যে লুকানোর জায়গা খুঁজতে শুরু করে দিল। একটি ছানা টেবিলের নিচে লুকানোর চেষ্টা করল। কিন্তু নেকড়েটি তাকে পেয়ে গেল এবং গপাগপ গিলে ফেলল। দ্বিতীয় ছানাটি চুলার পিছনে লুকাতে চেষ্টা করল। নেকড়েটি তাকে পেয়ে গেল এবং গপাগপ গিলে ফেলল। তৃতীয়টি লুকালো বাসনকোসন রাখার ঘরে টেবিলের নিচে। নেকড়েটি তাকে খুঁজে পেয়ে গেল এবং গপাগপ খেয়ে ফেলল। চতুর্থ ছানাটি লুকালো মায়ের ইজি চেয়ারের পেছনে। নেকড়েটি তাকে পেয়ে গেল এবং গপাগপ খেয়ে ফেলল। পঞ্চম ছানাটি বেড-কভারের নিচে লুকালো। কিন্তু নেকড়েটি তাকেও পেয়ে গেল এবং গপাগপ করে গিলে ফেলল। ষষ্ঠ ছানাটি কাপড় কাচার কাঠের মাত্রের মধ্যে লুকালো। নেকড়েটি তাঁকেও পেয়ে গেল এবং গপাগপ গিলে ফেলল। শুধুমাত্র সপ্তম ছানা, যে সবচেয়ে কম বয়সি ও সবচেয়ে ছোট্ট, সে নিজেকে পুরনো দেয়াল ঘড়ির পেছনে লুকিয়ে রাখতে সক্ষম হলো।
নেকড়েটি যখন আর কাউকে খুঁজে পেল না, তখন সে বিড়বিড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলল, ‘আমি সত্যিই মনে করতে পারছি না, এখানে কয়টি ছাগল ছানা ছিল, ছয়টি নাকি সাতটি? আমি মনে করতে পারছি না, ওদের কয়টি আমি গপগপিয়ে গিলেছি।’ সে হাসল এবং পেটে হাত বুলিয়ে বলল, ‘আমি সত্যিই খুব বোকা, যাই হোক, আমি এখন চলে যাব এবং কিছুক্ষণ শুয়ে থাকব। যদি কোনোটি বাকি থাকে, তো পরে ওদের ধরব, এটা নিশ্চিত।’
এরপর সে অলস গতিতে বেরিয়ে গেল। একটা আপেল গাছের নিচে চমৎকার শোয়ার জায়গা পেল। সেখানে শুয়ে সে ঘুমিয়ে পড়ল। খুব শীঘ্রই জোরে জোরে নাক ডাকতে শুরু করে দিল।
স্বভাবতই মা-ছাগল বাজার-সদাই নিয়ে ফিরে এলো। সে দেখল তার ঘরের সামনে দরজা সম্পূর্ণ খোলা। এটাই ছিল ওর জন্য বড় আতঙ্ক! সে ভয় পেয়ে গেল! দৌড়ে ভেতরে গেল এবং কাঁদতে শুরু করে দিল। কী বিশৃঙ্খল অবস্থা। সকল আসবাবপত্রই এলোমেলো। কাপড় কাচার গামলাটা উপুড় হয়ে পড়ে আছে। বেড কভার পড়ে আছে চুলার ওপর। সে জানে এসবের একটাই অর্থ, নেকড়েটি এখানে এসেছিল, সে তার সকল ছানাপোনাকে নিয়ে গেছে। সে দুঃখে আর্তনাদ আর বিলাপ করতে লাগল। ঠিক তখন শুনতে পেল, ঘরের মাঝ থেকে একটা ক্ষীণস্বর ভেসে আসছে। কেউ বলছে, মা, তুমিই আমার মা? সে কান্না থামাল, জবাব দিল, হ্যাঁ, আমিই তোমার মা, তুমি কোথায়? এখানে কী হয়েছিল? তার ছানাপোনাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট্টটি লুকিয়ে ছিল দেয়াল ঘড়িটার পেছনে। সেখান থেকে সে বেরিয়ে এলো, যা কিছু ঘটেছিল সব খুলে বলল।
বৃদ্ধ মা-ছাগলটি কেঁদে কেঁদে বলল, ওহ আমার সোনা, কী দুঃখের কথা! কী কষ্ট!
মা-ছাগল সিদ্ধান্ত নিল আশপাশটা একটু ঘুরে দেখবে ছানাপোনাদের কেউ এখানে-সেখানে আছে কিনা। আপেল গাছের নিচে গিয়ে দেখতে পেল একটা পেটমোটা বুড়ো নেকড়ে। সে ঘুমাচ্ছে আর নাক ডাকছে ঠিক এমনভাবে যেন গলা পর্যন্ত গিলেছে। মা-ছাগল তার কাছে গেল। দেখতে পেল নেকড়ের পেটের মধ্যে কিছু নড়াচড়া করছে। এতেই তার মাথায় চিন্তা এলো, হয়ত তার ছানাপোনারা এখনো জীবিত আছে এই অদ্ভুত নেকড়েটার পেটে। সে দ্রুত বেগে ছুটে গেল রান্নাঘরে, একটা বড় ও কাঁচি নিল। আপেল গাছের কাছে ফিরে এসে সে নেকড়ের পেট কাটতে শুরু করল। প্্রথমে পেটে একটা ছিদ্র করল। একটু একটু করে কাটতে কাটতে ছিদ্রটা বড়ো হলো। সে একটা মাথা দেখতে পেল। মাথাটা বেরিয়ে আসছে। তারপর দেখা গেল একটা লেজ, এরপর একটা পা। সে যত দ্রুত সম্ভব যতটুকু সম্ভব পেটটা কাটতে থাকল। কিন্তু খুব বেশি কাটতে হলো না। তার ছয় ছানাপোনা একে একে নেকড়ের পেট থেকে বেরিয়ে লফিয়ে পড়ল। ছাগল-মায়ের হৃদয়-মন আনন্দে ভরে গেল। কুৎসিত নেকড়েটা ছিল খুব লোভী, তাই সে চিবিয়ে না খেয়ে সবাইকে গপাগপ গিলে ফেলেছিল। আর তাই ছাগলছানারা সবাই তখনো বেঁচে ছিল। শুধু তাই নয়, তারা সবাই পেটের একই অংশে একই সঙ্গে ছিল। সে আবার ঘরের ভিতরে ছুটে গেল। ফিরল একটা বড় সুই আর সুতা নিয়ে। আর ছানাপোনাদের বলল কিছু বড় বড় পাথর যোগাড় করে আনতে। সে বলল, আমরা পাথর পুরে এর পেট ভরে দেবো, তারপর সেলাই করে দেবো। এটাই তাকে একটা বড়ো শিক্ষা দেবে।
ছোট্ট ছানাপোনাদের প্রত্যেকেই তাদের পক্ষে যতটা বড়ো সম্ভব- এমন একটা করে পাথর নিয়ে শীঘ্রই ফিরে এলো। বৃদ্ধ মা-ছাগল সেগুলো নেকড়ের পেটের ভিতর ভরে দিল। একসময় পাথর ভরা শেষ হলো, সে আবার পেট সেলাই করে দিল। যখন সেলাই শেষ হলো তারা সবাই ঘরের ভেতর চলে গেল। সবাই জানালার ধারে বসে তাকিয়ে থাকল, কখন নেকড়েটা জেগে উঠবে, সেই অপেক্ষায়।
স্বভাবতই নেকড়েটা জেগে উঠল। সে অধিকতর ক্লান্তি ও ভারী বোধ করল। বিশেষত পেটটা খুব ভারী লাগল এবং অনেক পিপাসা পেল। অনেক কষ্টে সে উঠে দাঁড়াল। তারপর টলমলে অবস্থায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে নদীর দিকে চলতে লাগল। চলতি পথে সাক্ষাক্ষণ গোঙাতে আর কাতড়াতে লাগল, ‘ওহ, ওহ, আমি খুব তৃষ্ণার্ত, আমি একটা পুরো নদী খেয়ে খেলতে পারি’। সে নদীর কাছে গেল, পানি খাওয়ার জন্য মাথা নোয়ালো। কিন্তু নিজেকে খুবই ভারী লাগল। কারণ, তার পেটের ভেতর ছিল অনেক পাথর। সে তীর থেকে পিছলে গেল, সোজা পানিতে পড়ে গেল। ধীরে ধীরে সে পানির নিচে অদৃশ্য হতে লাগল। অবশেষে পানিতে ডুবে গেল।
মা-ছাগল ও তার সাত ছানাপোনারা নিরপদ দূরত্ব রেখে নেকড়েটাকে অনুসরণ করল। যখন তারা দেখল, কুৎসিত নেকড়েটা ঢেউয়ের নিচে তলিয়ে গেছে, তখন তারা গাইতে ও নাচতে শুরু করল, নেকড়েটা মরেছে… নেকড়েটা মরেছে… আমাদের মায়ের কাছে বুদ্ধিতে হেরেছে… সে এখন মৃত… হুরবে… হুররে…।
মা-ছাগল তার ছানাপোনাদের ডাকলেন। বলতে শুরু করলেন, তোমরা এখন আমার কথা শোনো, আমরা প্রথমে ফিরে যাব এবং ঘর পরিষ্কার করব। তারপর এই দুঃসাহসিক অভিযান উদ্যাপনের জন্য আমরা একটা বড়ো পার্টি করব। পার্টিতে থাকবে সব চমৎকার জিনিস, যা আমি বন থেকে তোমাদেও জন্য নিয়ে এসেছি।
সাতটি ছোট্ট ছাগলছানার জীবনে এটা ছিল সবচেয়ে ভালো পার্টি, এরকম পার্টি তাদের জীবনে আর আসেনি!
Leave a Reply