মো. জোবায়ের হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক ইন্তেকাল করেছেন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে টাঙ্গাইল শহরের থানা পাড়া নিজ বাসভবনে মৃত্যু বরণ করেন আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ফজলুর রহমান খান ফারুক দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। পরে শনিবার সকালে তার কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফজলুর রহমান ফারুক ১২ অক্টোবর ১৯৪৪ সালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের কহেলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স পাস করেন। ফারুক ১৯৬০ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬২ সালে টাঙ্গাইল মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৬৫ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণ পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৬ দফা আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে টাঙ্গাইল-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ সালে বাকশাল গঠিত হলে টাঙ্গাইল জেলা বাকশাল এর যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সাল থেকে ২০১৫ সালের ১৭ আক্টাবর পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৭ সাল থেকে টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এছাড়াও টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চেয়াররম্যান ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০২১ সালে তাকে একুশে পদক প্রদান করা হয়।
এদিকে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুককে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ছাড়াই জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর দুটি মামলায় আসামী হয়েছিলেন তিনি। তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা না দিতে টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা কর্মীরা। এর আগে মতিয়া চৌধুরীকেও রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ছাড়াই দাফন সম্পন্ন করা হয়। জানাজায় অংশ নিতে দেখা যায়নি একমাত্র পুত্র টাঙ্গাইল-৭ ( মির্জাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভকেও। সরকার পরিবর্তনের পর তার নামেও একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে।