মো. জাহাঙ্গীর হোসেন:
ভ্যান চালক সিকিম আলী।ভ্যানের চাকা ঘুরলে চলে সংসারের চাকা। ঘরে আছে স্ত্রী দুই কন্যা ও বৃদ্ধা মা। দুটো টাকা আয় হলে উনুনে হাড়ি ওঠে তার। নয়তো একবেলা খেয়ে দুবেলা উপোস।করোনার কারণে গত কয়েকদিন ধরে ঘুরছে না সিকিমের ভ্যানের চাকা। ঘরে খাবার নেই।এতে অনাহারে রয়েছেন স্ত্রী দুই কন্যা ও বৃদ্ধা।
মঙ্গলবার মির্জাপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের বাসিন্দা সিকিম আলীর এমন দুবস্থার খবরটি পৌঁছে যায় উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি হাজী আবুল হোসেনের নিকট। খবর পেয়ে মুহূর্ত দেরি নয়, সিকিম আলীর বাড়িতে ছুটে যান তিনি।চাল-ডাল-আলু-তেল ও কিছু সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে পৌঁছে যান ওই পরিবারটির কাছে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহসড়কের মির্জাপুর বাইপাস লাগুয়া ছোট্ট বাড়িটির কাঁচা মাটির উঠোন।রয়েছে বাঁশের খুঁটির একটি টিনের দু’চালা ঘর। বৃদ্ধা বসেছিলেন বারান্দায়। ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন ছেলে সিকিম আলী। খাবার সামগ্রী হাতে তুলে দিতেই বৃদ্ধা দুই চোখের পানি ছেড়ে দিলেন। প্রার্থনা করলেন ভেজা চোখে। অসহায় ছেলের চোখ দুটোও তখন ছল ছল। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ অন্যরাও আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়লেন।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ছুটিতে দেশ। বন্ধ দোকানপাট। চলছে না গাড়ি। শূন্য পথঘাট। স্বল্প আয়ের মানুষও আজ গৃহবন্দী। কাজ নেই। কর্মহীন অনেকের ঘরে নেই খাবার।সেইসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হাজী আবুল হোসেন।করোনাভাইরাসের প্রভাবের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, কাঠমিস্ত্রি, ফেরিওয়ালা ও চায়ের দোকানদার।মঙ্গলবার মির্জাপুর পৌরসভার পৌষ্টকামুরী, বাইমহাটি, বাওয়ার কুমারজানী, কাণ্ঠালিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের হতদরিদ্র ও অসহায় প্রায় সাতশ পরিবারের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন তিনি।এর মধ্যে ছিল, চাল, ডাল, আলু, তেল,পেঁয়াজ ও হাত ধুয়ার সাবান। এছাড়া সচেতনামূলক লিফলেটও তাদের হাতে তুলে দেন।
এ কাজে তাকে সহায়তা করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আকন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজুরর রহমান, যুবলীগ নেতা শামীনুর রহমান, সদস্য রিপন মিয়া, শেখ মোহাম্মদ লাজলুসহ আরও অনেকেই ।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি হাজী আবুল হোসেন বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে সারাদেশে মানুষ ঘর বন্দি হয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।এতে স্বল্প আয়ের মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপনে হিমশিম খাচ্ছেন।এসব মানুষের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যার যার অবস্থান থেকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ প্রদান করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি এই খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন বলে জানান। পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে প্রায় ৭শ কর্মহীন মানুষকে তিনি সহাসয়তা করছেন বলে উল্লেখ করেন।
Leave a Reply